সম্প্রতি জারি করা এক নোটিশে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (USTR) দফতর জানিয়েছে, ভারতের কিছু শিল্পপণ্য — বিশেষ করে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তিপণ্য — এর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হবে।
মূল কারণ হিসেবে তারা তুলে ধরেছে ভারতের "অন্যায্য বাণিজ্য নীতি", বিশেষত রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে বাড়তে থাকা অর্থনৈতিক সম্পর্ক, যা যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ভারত দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক, জ্বালানি এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ২০২২ সালের ইউক্রেন যুদ্ধের পরেও ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বহাল রাখে এবং S-400 ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনে, যা আমেরিকার কৌশলগত ধৈর্যকে চ্যালেঞ্জ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতির কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলেনি, যা আমেরিকার চোখে "অগ্রহণযোগ্য"।
যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত CAATSA (Countering America's Adversaries Through Sanctions Act) আইন অনুযায়ী, যেসব দেশ রাশিয়া, ইরান বা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বা জ্বালানি চুক্তি করে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেতে পারে।
ভারত এর আগে S-400 ক্রয়ে এই আইনের কবলে পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও, মার্কিন কংগ্রেস সেই সময় বিশেষ ছাড় দেয়। কিন্তু সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে নতুন কোনো বড় চুক্তি CAATSA-র আওতায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে:
"ভারতের পররাষ্ট্রনীতি সবসময় স্বাধীন ও সার্বভৌম সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। আমরা সকল কৌশলগত অংশীদারের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী।"
তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ভারত বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে প্রস্তুত এবং স্বনির্ভরতার ওপর আরও জোর দেবে।
বাণিজ্যিক প্রভাব: ভারতীয় ইস্পাত, প্রযুক্তিপণ্য ও রফতানি খাতের ওপর চাপ বাড়বে।
কৌশলগত টানাপড়েন: QUAD, I2U2-এর মতো জোটে ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য: চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে পারে, যা আমেরিকার জন্য উদ্বেগের।
0 মন্তব্যসমূহ